Friday, December 9, 2011

ভ্যালেন্টাইন, ও ভ্যালেন্টাইন


                                                    ------ নির্ঝর চক্রবর্তী

তোমাকে অভিবাদন


সেদেশে জ্যোত্স্নালোকে কুয়াশার চাদর গায়ে
                          রজনীগন্ধা গান গায়,
বাসার মধ্যে পায়রা দুটো
                  চুপটি করে শোনে সেই গান I
সবুজ শস্যক্ষেতে ধানের শীষগুলো
                                     নেচে ওঠে I
প্রজাপতিরা চিরবসন্তকে জানায় অভিবাদন I

আর আমি তোমাকে জানাই অভিবাদন,
                              এই জ্যোত্স্নালোকে I

তুমি এক স্বপ্ন, দেখো আমি কেমন পাগল I
তুমি এক স্বপ্ন, দেখো আমি তোমার জন্য
                              গোলাপফুল এনেছি I
তুমি এক স্বপ্ন, দেখো আমি তোমার জন্য
                     এক মুঠো জ্যোত্স্না এনেছি I
আর দুচোখে জ্যোত্স্নালোকের আশা নিয়ে,
                        আমি কেবল স্বপ্নই দেখি,
                         সেও তো তোমার জন্য I

তুমি ভোরের প্রথম সূর্য্য, গ্রাম্য বধুর কপালের সিঁদুর I
তুমি পূর্নিমার চাঁদ, তুমিই প্রেম I
তুমি সদ্য বৃষ্টিস্নাত আকাশের সাতরঙা রামধনু I
তুমিই বসন্তের ভোরের কোকিল,
                       রোজ ঘুম ভাঙ্গে তোমারি ডাকে I
___________________________________

ভ্যালেন্টাইন, ও ভ্যালেন্টাইন


পাবলো নেরুদার প্রেমের কবিতা পড়ছিলাম,
'ভাবি, আগে কিরকমটা ছিলে I '
দুচোখে সুনীল ভালবাসা
আর দুহাতে হৃদপিন্ডের দুটো খন্ড নিয়ে পড়েছিলাম,
'পাঁশুটে মনীষা পাখি ডাকছে যেন I '
আর ঠিক তখনই দূর থেকে
একটা কাকের ডাক শুনতে পেলাম I
ভালবাসা, এমনটাতো হবার কথা ছিল না I
কথা ছিল বসন্তের কোকিল হয়ে
                               তুমি আমায় ডাকবে -
"ওঠো, ভোরের প্রথম সূর্য্য তোমার জন্য অপেক্ষা করছে I "
কিন্তু,
ভ্যালেন্টাইন, ও ভ্যালেন্টাইন,
আরো একটা চোদ্দই ফেব্রুয়ারী চলে গেল,
তুমি এলে না I
আমি এসেছিলাম,
হাতে ছিল রজনীগন্ধা,
জামায় ছিল গোলাপ;
সবকিছু গঙ্গার জলে ভাসিয়ে দিলাম,
তুমি জানতেও পারলে না I
ভ্যালেন্টাইন, আমার ভ্যালেন্টাইন,
এমনটা কি হবার কথা ছিল?
হয়ত এমনটাই হবার ছিল;
আমিই ভুল শুনেছিলাম,
আমিই ভুল বুঝেছিলাম I
জানতাম না, জ্যোত্স্নালোক ও সুর্যালোকের মধ্যে
তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সীমাহীন পার্থক্য;
আর সেই জন্যই হয়ত,
ভালবাসা হল পাহাড়ের কোলে ভেসে বেড়ানো মেঘ,
আর তুমি,
সাদা চিনেমাটির থালায় রাখা একগ্রাম পারদ I
_______________________________________

সূর্য্য, কবিতা এবং তুমি


কোকিলেরা বাসায় ফিরে গিয়েছে,
গোলাপ জলে ভেসে
অনেকদূর চলে গিয়েছে,
রজনীগন্ধা বনস্পতির আড়ালে
মুখ ঢাকতে চাইছে I
বসন্ত এখন স্বপ্ন,
সূর্য্য বড়ই প্রখর I
প্রিয়তমা, সূর্য্য বড়ই নিঠুর I
কাল রাতে দেখা স্বপ্নগুলো
সূর্যের তাপে ধুসর হয়ে গিয়েছে I
কবিতাও এখন স্বপ্ন -- রাত জেগে দেখা I
কিন্তু প্রেয়সী, কবিতা যে আমায় লিখতেই হবে
                                  ---------- তোমার জন্য,
নববর্ষের প্রথম আঙ্গিকে I
চাবাগানের নির্জন দিনগুলোতে,
তিস্তার ঐ পার ভেঙে চলা দিনে
তুমিই আমার শেষ হৃদস্পন্দন I
প্রমান করবই,
সূর্যও সেই স্পন্দন থামাতে পারবে না ------
তাই কবিতা আমি লিখেই যাব
হাজার বছর ধরে,
তোমাকে শেষ দেখা সেই নীরব সন্ধ্যাকে মনে রেখে I
পারলে তুমি এসে,
সুর্য্যকে ব'কে দিও ----
ভালবাসা হল পাহাড়ের কোলে ভেসে বেড়ানো মেঘ--

No comments:

Post a Comment