Monday, October 3, 2011

আমি জানি

                                                     নির্ঝর চক্রবর্তী
কুয়াশার চাদর গায়ে রজনীগন্ধা তখন সবে ঘুমাতে যাচ্ছে,
বাবুই-এর বাসায় জোনাকির আলো সদ্য জ্বলেছে,
উত্তরের হালকা হাওয়ায় ফার্ণের পাতাগুলো মৃদু দুলছে....
আর তখনই
মেঘের পর্দাটাকে আলতো ছোঁয়ায় সরিয়ে দিয়ে
তুমি ঘোষণা করেছিলে তোমার আগমনী, চাঁদের রথে চেপে
আজ সন্ধ্যায় I
স্নিগ্ধ আলোর ঢেউ-এ ভেসে গিয়েছিল প্রাচীন চাবাগান I
পৃথিবীর বুকে নেমে এসেছিলে তুমি, প্রানের জোয়ার নিয়ে I
তোমার হাসিটা ছিল বড়ই চঞ্চল - পাহাড়ি ঝরনার মতই লাগামহীন I
তোমার নি:শ্বাসের প্রতিটি বায়ুকনা
শিউলি ফুল হয়ে ঝরে পড়ছিল আলোঝরা সন্ধ্যায়;
আমি সেগুলো তোমায় কুড়িয়ে দিয়েছিলাম -
তুমি সেই ফুল দিয়ে মালা গেঁথে আমায় ফিরিয়ে দিয়েছিলে;
তারপর ফিরে গিয়েছিলে দূরে, অনেক দূরে-
যেখানে তোমাকে শুধু দেখা যায়, ছোঁয়া যায় না-
অনুভব করা যায়, প্রকাশ করা যায় না I
ফিরে যাবার সময় তোমার হাসিটা আরো পবিত্র দেখাচ্ছিল-
সাদা গোলাপের মতই পবিত্র - গভীর I
কিন্তু আমি তোমার চোখের এককোনে জলের বিন্দু দেখেছিলাম,
সবাই ভেবেছিল মুক্তকনা,
কিন্তু আমি জানতাম ঐ জলকণা তোমার মতই পবিত্র, স্বচ্ছ I
আমি জানি ঐ জলের বিন্দুই কাল শিশির হয়ে ঝরে পড়বে
সবুজ ঘাসের ওপর I
ঐ জলকণাগুলোই একটা একটা করে জমে, একদিন মেঘ হবে,
তারপর বৃষ্টি হয়ে ভিজিয়ে দেবে আমাকে I
তুমি আবার পৃথিবীতে নেমে আসবে
-- আমার সাথে গল্প করতে I
আমি জানি, তুমি একদিন ফিরে আসবেই
-- আমার কাছে,
কারণ, আমি যে তোমার চোখের কোণে জলের বিন্দুটা পরিস্কার দেখেছিলাম I

No comments:

Post a Comment